আপনারা সবাই জানেন যে, ঈদুল আযহা হল মুসলিম উম্মাহর দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ঈদের অন্যতম। এই ঈদটি ইসলামী বর্ষপঞ্জীর শেষ মাস জিলহজ্জ মাসে আসে। এই উৎসবটি কুরবানির ঈদ নামেও পরিচিত। ঈদুল আযহা মূলত আরবি শব্দ, যার অর্থ হলো ‘ত্যাগের উৎসব’। এই ঈদ উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল ত্যাগ করা।
এই মাসেই মুসলমানদের জন্য হজ্জ আদায়ের ফরজ ইবাদত সম্পন্ন হয়। সারা বিশ্বের মুসলমানরা নিজেদের শারীরিক ও আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী হজ্জ পালনের চেষ্টা করে থাকেন। আর হজ্জের শেষ দিনে পড়ে ঈদুল আযহার উদযাপন করা হয়ে থাকে।
আজকের এই পোস্টে আমরা জানব ২০২৪ সালের ঈদুল আযহার সম্ভাব্য তারিখ, এর তাৎপর্য এবং উদযাপনের নিয়মনীতি সম্পর্কে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে ? When is eid ul adha 2024
২০২৪ সালের ঈদুল আজহা উদযাপনের সম্ভাব্য তারিখ রবিবার, ১৬ জুন হতে ১৮ জুন ২০২৪ ইংরেজি তারিখের মধ্যে। তবে মনে রাখতে হবে যে এই তারিখটি চাঁদ এবং সৌদিআরবের ক্যালেন্ডারের ঘোষণার উপর নির্ভর করবে।
ইসলামি ক্যালেন্ডারের জিলহজ্জ মাসে চাঁদ দেখা তার উপর নিরবর করে ঈদুল আজহার তারিখ নির্ধারিত হবে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ঈদুল আজহা সম্ভবত ১৬ জুন কিংবা ১৭ জুন পড়বে। তবে এই তারিখটি পূর্বাভাসমাত্র। কারণ নতুন চাঁদের উপর নির্ভর করবে ঈদুল আজহার প্রকৃত তারিখ।
ঈদুল আযহা কিভাবে উদযাপন করা হয়?
ঈদুল আযহা মুসলমানদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই দিনটি নবী ইবরাহিম (আলাইহিস সালাম) এর আল্লাহের প্রতি অখণ্ড আনুগত্য ও বিশ্বাসের প্রতীক। আল্লাহ যখন ইবরাহীমকে তার প্রিয় জিনিস কুরবানি স্বরূপ তার পুত্র ইসমাইলকে কোরবানি দিতে নির্দেশ দেন, তখন ইবরাহীম তাতে রাজী হন। কিন্তু পরে আল্লাহ্ তাকে ইসমাইল এর পরিবর্তে একটি পশু কুরবানি দিতে নির্দেশ করেন।
এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণ করে প্রতি বছর ঈদুল আযহার দিন মুসলমানরা পশু কোরবানি দেন। অর্থাৎ ভেড়া, গরু, উট বা ছাগল কোরবানি দেওয়া হয়। কোরবানির গোশতের এক তৃতীয়াংশ নিজেরা খান, এক তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের মধ্যে বিতরণ করা হয় এবং বাকি অংশটি গরিব নিরুপায় মানুষদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
Read More: সকালে হাঁটার ৮টি উপকারিতা | The Benefits of Morning Walk
বাংলাদেশে ২০২৪ এর ঈদুল আযহা । Eid ul Adha 2024 Bangladesh
বাংলাদেশের মুসলমান জনগণ ২০২৪ সালের ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ আনন্দ ও উল্লাসের সাথে উদযাপন করবেন। এই বছর ঈদুল আযহা সম্ভবত ১৬ জুন থেকে ১৮ জুন, রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনদিন ধরে পালিত হবে। তবে নির্ভর করবে চাঁদের অবস্থা এবং সৌদি আরবের ক্যালেন্ডারের ঘোষণার উপর।
ঈদের প্রথম দিন সকালে মুসলমানরা ঈদগাহে গিয়ে বিশেষ ঈদের নামাজ আদায় করবেন। তারপর পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করবেন এবং মিষ্টি খাবার বিনিময় করবেন। দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হবে পশু কোরবানি। সক্ষম মুসলমানরা একটি করে পশু কোরবানি দেবেন।
এছাড়াও ঈদের তিনদিন ধরে বিভিন্ন মেলা, র্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এসব অনুষ্ঠানে মানুষ সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনের মাধ্যমে ঈদের আনন্দ উপভোগ করবেন। ঈদের দিনগুলোতে গরিব ও দুস্থদের প্রতি সহায়তা ও দান-খয়রাতও বেড়ে যাবে।
সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোও বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচির আয়োজন করবে। মিডিয়াগুলোতেও ঈদ বিষয়ক বিশেষ নাটক, গান, আলোচনাসভা প্রচার করা হবে। এভাবে বাংলাদেশবাসী ধর্মীয় ভাবনা ও আনন্দ উপভোগের মাধ্যমে ঈদুল আযহাকে উদযাপন করবে।
Eid Ul Adha 2024 Countdown
2024 সালের ঈদ উল আযহা কাউন্টডাউন এই গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টের প্রত্যাশাকে চিহ্নিত করে। যেহেতু মুসলমানরা ঈদ উল আযহার আগমনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে, কাউন্টডাউনটি উদযাপনের একটি অনুস্মারক হিসেবে কাজ করে। আধ্যাত্মিক প্রতিফলন, সম্প্রদায় এবং ত্যাগের সময়, ঈদ উল আযহা 2024 পর্যন্ত দিন, ঘন্টা, মিনিট এবং সেকেন্ড গণনা করতে আমাদের সাথে যোগ দিন।
Here is the eid ul adha 2024 countdown shown in below.
২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে?
১৬ জুন থেকে ১৮ জুন, রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত এই তিনদিন ২০২৪ সালের ঈদুল আযহার সম্ভাব্য তারিখ।
সাধারন জিজ্ঞাসাসমুহ
২০২৪ সালের ঈদুল আজহা কত তারিখে?
২০২৪ সালের ঈদুল আজহা সম্ভাব্যভাবে ১৬ জুন থেকে ১৮ জুন, রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত উদযাপিত হবে। তবে এই তারিখগুলো চাঁদের অবস্থা ও সৌদি আরবের ক্যালেন্ডারের ঘোষণার উপর নির্ভরশীল।
এ বছর কোরবানির ঈদ কবে?
২০২৪ সালে কোরবানির ঈদ অর্থাৎ ঈদুল আযহা সম্ভবত ১৬ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত উদযাপিত হবে। তবে নিশ্চিত তারিখ জানতে হলে চাঁদের দেখা এবং সৌদি আরবের ক্যালেন্ডার দেখতে হবে।
২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখে?
২০২৫ সালের ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদের সঠিক তারিখ এখন থেকে বলা সম্ভব নয়। তবে ২০২৪ সালের তারিখ থেকে অনুমান করা যায় যে, ২০২৫ সালে এটি ৫-৭ জুন এর কাছাকাছি পড়তে পারে। কিন্তু নিশ্চিত তারিখ জানার জন্য সেই বছরের চাঁদ ও সৌদি আরবের ঘোষণা দেখতে হবে।
২০২৪ সালের ঈদের নামাজের সময়?
ঈদের নামাজের সময় হবে সূর্যোদয়ের পর। তবে নির্দিষ্ট সময় জানতে হলে স্থানীয় মসজিদ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। সাধারনত সকাল ৭টা থেকে ৯টার মাঝেই নামাজ শেষ করা হয়ে থাকে।
২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত দিনে?
ঈদুল আযহা প্রতিবছরই তিন দিন ধরে উদযাপিত হয়ে থাকে। সুতরাং ২০২৪ সালেও ঈদুল আযহা তিনদিন বা ৭২ ঘন্টা ধরে পালন করা হবে। যদি অনুমান সঠিক হয়, তাহলে ২০২৪ সালে ঈদুল আযহা ১৬ই জুন থেকে শুরু হয়ে ১৮ই জুন পর্যন্ত উদযাপিত হবে।
তবে আবারও বলা প্রয়োজন, চাঁদের দেখা ও সৌদি আরবের ঘোষণার উপর নির্ভর করবে এই তিন দিনের নির্দিষ্ট তারিখগুলো। মুসলমান উম্মাহর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই ঈদকে আনন্দ উল্লাসের সাথে সারা বিশ্বে তিনদিন ধরে পালন করা হবে।
২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে?
২০২৪ সালের ঈদুল আযহা ১৬ জুন থেকে ১৮ জুন, রবিবার থেকে মঙ্গলবার এর মাঝে উদযাপিত হবে। তবে এই তারিখগুলো চাঁদের অবস্থা ও সৌদি আরবের ক্যালেন্ডারের ঘোষণার উপর নির্ভরশীল।
ঈদুল আযহার দিন কি কি করতে হয়?
সকালে ঈদগাহে গিয়ে বিশেষ ঈদের নামাজ আদায় করা।
উত্তম পোশাক পরিধান করা এবং পরিবার ও বন্ধুদের সাথে দেখা করা।
পশু কোরবানি দেওয়া এবং সেই কোরবানির গোশত নিজেরা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু ও গরিবদের মধ্যে বণ্টন করা।
গরিবদের মধ্যে অর্থ এবং বস্ত্রাদি বিতরণ করা।
আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
ঈদুল আযহা কেন পালন করা হয়?
ঈদুল আযহা পালনের প্রধান কারণ হলো নবী ইব্রাহিমের (আলাইহিস সালাম) আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও বিশ্বাসের স্মৃতি বহাল রাখা। আল্লাহ যখন ইব্রাহিমকে তার পুত্র ইসমাইলকে কোরবানি দিতে নির্দেশ দেন, তখন তিনি আল্লাহর আদেশ মেনে নিতে প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহ তাকে একটি মেষ কোরবানি দিতে বলেন। এই ঘটনাকে স্মরণ করেই ঈদুল আযহা পালিত হয়।
ঈদুল আজহা ২০২৪ কত তারিখে বাংলা?
ঈদুল আজহা সম্ভবত ১৬ জুন থেকে ১৮ জুন, ২০২৪ পর্যন্ত পালিত হবে। সুতরাং বাংলা আষাঢ় মাসের ০২-০৪ তারিখের মধ্যে ঈদুল আযহার দিনগুলো পড়বে।
অমুসলিমদের কাছে ঈদুল আযহার ব্যাখ্যা?
ঈদুল আযহা হলো মুসলমানদের একটি বার্ষিক ধর্মীয় উৎসব। এটি তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত। এই উৎসবে তারা একপ্রকার পশু কোরবানি দেন, যার মাংস নিজেরা এবং অভাবী মানুষদের মধ্যে বিতরণ করেন। এটি নবী ইব্রাহিমের (আলাইহিস সালাম) ঈশ্বরের নির্দেশে তার পুত্রকে আহুতি দিতে যাওয়া, কিন্তু পরে ঈশ্বরের নির্দেশে পশু কোরবানি দেওয়ার ঘটনাকে স্মরণ করে।
বকরা ঈদে ছাগল কোরবানি কেন দেওয়া হয়?
বকরা ঈদ বা ঈদুল আযহায় ছাগল কোরবানি দেওয়ার কারণ হলো ইসলামের শরিয়া আইন অনুযায়ী শুধুমাত্র ছাগল, গরু, মহিষ, উট ও মেষ সহ গৃহপালিত পশু কোরবানির উপযোগী পশু। এগুলো ঘাস খাওয়া জানোয়ার হওয়ায় শুধুমাত্র এগুলোকেই কোরবানী দেওয়ার অনুমতি রয়েছে।